ধর্ষণ মামলার আসামির সঙ্গে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বিয়ে দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশে খুলনা জেলা কারাগারে এই বিয়ে দেওয়া হয়। কারাগারের ভেতরে গত রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে এই বিয়ে হয় এবং তা গতকাল সোমবার জানাজানি হয়। সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা জেলা কারাগারের জেলার তারিকুল ইসলাম।
ওই আসামি খুলনা সদর থানাধীন রায়পাড়া এলাকার রফিকুল ইসলাম বাবু। তিনি রায়পাড়ার একটি বাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ করতো। সে বাড়িতেই গৃহকর্মী ছিল ১৫ বছরের ওই কিশোরী। রফিকুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন গৃহকর্তা। মামলায় বলা হয়, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে রফিকুল। তাতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গৃহকর্তা মামলা করলে সে সময় গ্রেপ্তার হন রফিকুল।
জেলার তারিকুল জানান, খুলনা সদর থানায় ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর ধর্ষণের মামলা হয়। তখন থেকে কারাগারে রফিকুল। আর ওই মেয়েটি ছিল সেফহোমে ছিলেন। সেখানেই তার সন্তান জন্ম নেয়।
তরিকুল আরও জানান, রফিকুল তার আইনজীবীর মাধ্যমে বিয়ের করার শর্তে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। সেখান থেকে আদেশ আসে বিয়ে দেওয়ার। বিয়ের পর রফিকুলের জামিনের আবেদন বিবেচনা করা হবে বলে আদেশে বলা হয়। বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন জেল সুপার ওমর ফারুক, জেলার তারিকুল ইসলাম, ডেপুটি জেলার মো. ফখরউদ্দিন, ডেপুটি জেলার মো. নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টরসহ বিভিন্ন পদে নিয়োজিত কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না। আর এই বিয়েটা উচ্চ আদালতের নির্দেশেই হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে মামলাটি করার পর বাদী আমার সহযোগিতা চেয়েছিলেন। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা থাকায় তাকে সেফহোমে রাখার আবেদন করেছিলাম। পরে আদালত তাকে বাগেরহাটের সেফহোমে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। জেলার তরিকুল জানান, বিয়ের পর মেয়েটিকে আবার সেফহোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।